displeasure
*অসন্তুষ্টি*
চল ধীরে ধীরে বিশ্লেষণ করি 👇
🌿 ১️⃣ কোরআনের আলোকে: কৃতজ্ঞতা ও ন্যায়ের মূলনীতি
📖 সূরা আত-তাগাবুন (৬৪:১৬)
“অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় কর যতটুকু তোমাদের সাধ্য আছে, শ্রবণ করো, আনুগত্য করো, এবং ব্যয় করো — এটি তোমাদের নিজেদের কল্যাণের জন্য।”
👉 অর্থাৎ, স্বামী তার সাধ্যের মধ্যে যা করতে পারে তাই তার দায়িত্ব। আল্লাহ কখনও এমন বোঝা চাপান না যা মানুষের সাধ্যের বাইরে।
➡️ তাই স্ত্রী যদি স্বামীর সাধ্যের প্রতি অসম্মান দেখায়, সেটি আসলে আল্লাহর বিধানের অবমাননা।
📖 সূরা আল-বাকারা (২:২৩৩)
“কাউকে তার সাধ্যের বাইরে বোঝা দেওয়া হয় না...”
👉 এখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে—স্বামী যতটা সক্ষম, ততটাই তার দায়িত্ব। স্ত্রী সেই সীমার বাইরে কিছু দাবি করলে সেটা অন্যায়ের পর্যায়ে পড়ে।
🌿 ২️⃣ হাদীসের আলোকে: স্ত্রীর অকৃতজ্ঞতার সতর্কবাণী
📜 সহীহ বুখারী (হাদীস ২৯) ও সহীহ মুসলিম (হাদীস ৯০২)
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন—
“আমি জাহান্নামে নারীদের সংখ্যাধিক্য দেখেছি।”
সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলেন, “হে আল্লাহর রাসূল, কেন?”
তিনি ﷺ বললেন—
“কারণ তারা স্বামীদের প্রতি অকৃতজ্ঞ হয়। যদি তুমি তাদের প্রতি সারা জীবন উপকার করো, আর একবার কিছু তাদের মন মতো না হয়, তারা বলে— ‘তুমি কখনোই আমার জন্য কিছু করোনি।’ ”
👉 এই হাদীস সরাসরি তোমার প্রশ্নের মূল পয়েন্টে আঘাত করে।
যদি স্বামী তার সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টাশীল হয়, কিন্তু স্ত্রী তবুও অসন্তুষ্টি দেখায়, “তুমি কিছুই দাও না” ধরনের কথা বলে, তাহলে সেটা নবী ﷺ এর বর্ণিত নারীর অকৃতজ্ঞতার মধ্যে পড়ে।
🌿 ৩️⃣ ন্যায় ও কৃতজ্ঞতার ইসলামী মানদণ্ড
📖 সূরা ইবরাহিম (১৪:৭)
“তোমরা কৃতজ্ঞ হলে আমি তোমাদের আরও বৃদ্ধি করব, আর অকৃতজ্ঞ হলে নিশ্চয় আমার শাস্তি কঠোর।”
👉 এখানে “কৃতজ্ঞতা” শুধু আল্লাহর প্রতি নয়, মানুষে মানুষেও প্রযোজ্য — বিশেষত স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে।
স্বামীর প্রচেষ্টাকে অবহেলা করা, তার সাধ্যের মধ্যে করা কাজকে ছোট করে দেখা — তা অকৃতজ্ঞতার আচরণ।
🌿 ৪️⃣ রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জীবন থেকে উদাহরণ
রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর স্ত্রীদের সাথে বিনয়ী ছিলেন, তাদের ভালোবাসতেন, কিন্তু তিনিও দারিদ্র্যে জীবন কাটিয়েছেন। কখনও কখনও ঘরে কয়েকদিন আগুন জ্বলতো না, শুধুমাত্র খেজুর আর পানি খেয়ে দিন কাটতো।
একবার স্ত্রীগণ কিছুটা দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন—তখন আল্লাহর নির্দেশ নেমে আসে:
📖 সূরা আল-আহযাব (৩৩:২৮-২৯)
“হে নবী! তুমি তোমার স্ত্রীদের বলো— যদি তোমরা পার্থিব জীবন ও তার সাজসজ্জা চাও, তবে এসো, আমি তোমাদের কিছু দিয়ে সুন্দরভাবে বিদায় দিই। আর যদি তোমরা আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও পরকালের কামনা করো, তবে আল্লাহ তোমাদের জন্য মহান পুরস্কার রেখেছেন।”
👉 এই আয়াত দেখায়, ইসলাম চায় স্ত্রী যেন তার স্বামীর আর্থিক সীমাবদ্ধতাকে বুঝে নেয়, যদি সে ধর্মপ্রাণ ও দায়িত্বশীল হয়।
🌿 ৫️⃣ সারমর্ম
বিষয় ইসলামের অবস্থান
স্বামী সাধ্য অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছে আল্লাহর দৃষ্টিতে পূর্ণ দায়িত্ব সম্পাদন
স্ত্রী কৃতজ্ঞ নয় বা অভিযোগ করে “তুমি কিছুই দাও না” হাদীস অনুযায়ী অকৃতজ্ঞতার গুনাহ
সঠিক আচরণ ধৈর্য, কৃতজ্ঞতা, পারস্পরিক বোঝাপড়া
আল্লাহর প্রতিশ্রুতি কৃতজ্ঞের জন্য বৃদ্ধি, অকৃতজ্ঞের জন্য শাস্তি
🌼 শেষ কথা:
ইসলাম চায় না সংসার অহংকার বা হিসাবের উপর দাঁড়াক — চায় তা গঠিত হোক বোঝাপড়া, কৃতজ্ঞতা, ও মমতার উপর।
যদি স্বামী চেষ্টা করে, আল্লাহ তা জানেন। যদি স্ত্রী ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতা ধরে রাখে, আল্লাহ তাকে সম্মানিত করবেন।
আর যদি অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, তখন সেটি শুধু স্বামীর প্রতি নয়, বরং আল্লাহর অনুগ্রহ অস্বীকার করার শামিল হয়ে যায়।
তুমি চাইলে আমি এটিকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে “স্বামীর সাধ্যের প্রতি স্ত্রীর অকৃতজ্ঞতা — কোরআন ও হাদীসের আলোকে বিশ্লেষণ” শিরোনামে পূর্ণাঙ্গ প্রবন্ধ আকারে লিখে দিতে পারি।
চাও কি আমি সেই রূপে সাজিয়ে দিই?
